Monday, August 19, 2013

রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। যার নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে রহস্য। যে রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বছরের পর বছর তৈরি হয়েছে নতুন রহস্যের। কিন্তু রহস্য থেকে গেছে রহস্যই। রহস্য থেকে জন্ম নিয়েছে নতুন রূপকথা। যে রূপকথার শুরুটা রোমাঞ্চকর, শেষটা করুণ। এ রূপকথার মধ্যে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, রয়েছে মানুষের অলীক বিশ্বাস।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের একটি অঞ্চলের নাম। জাহাজ এবং বিমান চলাচলের একটি রুট এটি। কিন্তু ভয়ানক কথা এই যে, বিমান কিংবা নৌযানগুলো এ অঞ্চল দিয়ে চলাচলের সময় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়, কিংবা বলা যায় হয়েছে।

যে যানগুলো নিখোঁজ হয়েছে, অনেক চেষ্টার পরেও সেসব নৌজাহাজ বা বিমানের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। উপরন্তু যেসব বিমান ও জলযান তাদের খোঁজে বের হয়েছে, তাদের অধিকাংশই আর ফেরেনি। কিন্তু কেন? কী আছে সেখানে? কেনই বা একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে এ স্থানে? সেগুলো কি আদৌ কেনো দুর্ঘটনা, নাকি অন্য কিছু?  বন্ধুরা, চলো আজ এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের অপর নাম ডেভিলস ট্রায়াঙ্গল। বাংলায় যাকে বলা হয় শয়তানের ত্রিকোণ। বিশ্বের মানচিত্রে এর অবস্থানটি লক্ষ্য করলে দেখবে এর উত্তর কোণে বারমুডা, দক্ষিণ কোণে পুয়ের্তো রিকোর সান জুয়ান এবং পশ্চিম কোণে ফ্লোরিডার মিয়ামির অবস্থান। এ তিনটি স্থানের মধ্যবর্তী অংশকে বলা হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। আর এ অঞ্চলেই সংঘটিত হয়েছে অস্বাভাবিক বেশকিছু ঘটনা।

কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যাক। ৪ মার্চ, ১৯১৮। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার জি. ডব্লিউ. ওউরলের নেতৃত্বে ৩০৯ জন নাবিকসহ ইউএসএস সাইক্লোপস নামক যুদ্ধ জাহাজ বারবাডোজ দ্বীপ থেকে যাত্রা করে। কিন্তু বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে প্রবেশের কিছু সময় পর থেকে এ পর্যন্ত সে জাহাজ বা তার একজন নাবিকেরও আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সাইক্লোপসের মতো আরো দুটি মার্কিন জাহাজ নিখোঁজ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়।

১৯১৯ সালে ক্যারোল এ. ডিএরিং নামের পাঁচ মাস্তুলের পালের জাহাজটি একটি বালুচরে আটকে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়, কিন্তু পাওয়া যায়নি তার একজন যাত্রীকেও। ১৯৪৫ সালের পাঁচ ডিসেম্বর ফ্লাইট-১৯ নামক একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিখোঁজ হয় এ অঞ্চলেই। বিমানটির খোঁজে বের হয় অন্য একটি উড়োজাহাজ। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেটিও আর ফিরে আসেনি।

১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি আজোর থেকে বারমুডা যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় ব্রিটিশ সাউথ এয়াওয়েজের যাত্রীবাহী বিমান জি-এএইচএন পি স্টার টাইগার। পরের বছর একই মাসে বারমুডা থেকে কিংস্টোন যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় একই কোম্পানির আরেকটি যাত্রীবাহী বিমান স্টার এরিয়েল। ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বরে পুয়ের্তো রিকো থেকে মিয়ামি যাওয়ার পথে ৩২ জন যাত্রীসহ নিখোঁজ হয় ডগলাস ডিসি-৩ নামক বিমান।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে কী এমন আছে, যা এতগুলো দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে? কথিত আছে, এ মহাসাগরের তলদেশে ডুবে আছে আরেকটি মহাদেশ। আর সে মহাদেশেরই কোনো বিশেষ শক্তি গ্রাস করছে এ জাহাজ ও বিমানগুলোকে।

অন্য একটি মতে, এ অঞ্চলে একটি বিশেষ চৌম্বকীয় শক্তির প্রভাব রয়েছে, যা দিক নির্ণায়ক যন্ত্রে ত্রুটির সৃষ্টি করে নাবিককে বিভ্রান্ত করতে পারে। তবে বিশেজ্ঞরা বলছেন, কোনো অলৌকিক শক্তির প্রভাবে নয়, বেশ কিছু কারণেই এ সব দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তারা কারণ হিসেবে বলেছেন, উত্তর আটলান্টিকের একটি প্রচণ্ড শক্তিশালী স্রোতের নাম গল্ফ স্রোত। এর গতি প্রতি সেকেন্ডে ২.৫ মিটার। যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কোনো প্রয়োজনে বিমানকে ওয়াটার ল্যান্ডিং (জরুরি প্রয়োজনে উড়োজাহাজকে কোনো জলরাশির ওপর অবতরণ করানো) করালে এ তীব্র স্রোতের আঘাতে বিমানটি প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একইভাবে স্রোতের সঙ্গে থাকা ভাসমান বস্তুর আঘাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিমানটি।

দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে এ অঞ্চলে সৃষ্ট প্রচণ্ড শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ এতো দ্রুত বেড়ে যায় যে, কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ারও সুযোগ থাকে না। ১৯৮৬ সালে এমন একটি দুর্ঘটনায় ডুবে গিয়েছিলো প্রাইড অব বাল্টিমোর নামক নৌজাহাজ। বেঁচে যাওয়া একজন নাবিকের মতে, বাতাস হঠাৎ করে ঘন্টায় ২০ মাইল থেকে প্রায় ৯০ মাইলে উন্নীত হয়, যা সামলানো জাহাজটির পক্ষে একেবারেই অসম্ভব ছিল।

এমন বৈজ্ঞানিক বা কাল্পনিক বিশ্বাস কোনোটিই পৌঁছাতে পারেনি রহস্যের শেষ সীমান্তে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বিশ্বের কাছে এমনই এক রহস্য, যার কোনো শেষ নেই।

জলের নিচে জাদুঘর

জলের নিচে জাদুঘর!


জলের নিচে জাদুঘর!
জলের নিচে অনেক মানুষ। একেকজন রয়েছেন একেক ভঙ্গিতে। কেউ দলবেঁধে দাঁড়িয়ে, কেউ আনমনে চেয়ারে বসে, কেউ প্রতিবাদী হাত তুলে আবার কেউ বা নিরব চোখে চেয়ে। রঙিন মাছগুলোর সঙ্গে তাদের বেশ সখ্যতা। মানুষগুলোর পুরো শরীর ঘিরে ঘুরছে তারা। কখনো আবার চোখে মুখে আদরও দিচ্ছে। কিন্তু মানুষগুলো কি নিষ্ঠুর! কোনো ভাবলেশ নেই। স্ট্যাচু হয়ে আছে!

ভাবছো কেন? স্ট্যাচু হবেই বা না কেন! এসব মানুষের যে প্রাণ নেই! তবু জলের নিচে মিলেমিশে রয়েছেন তারা। আলাদা এক জগতের বাসিন্দা। আছেন ভালোই। m3

কোনো রূপকথা বা স্বপ্নলোকের গল্প বলছি না কিন্তু! এমন ঘটনার সত্যি দেখা পাওয়া যাবে ম্যাক্সিকোতে।

স্বপ্নলোকের গল্প মনে হলেও এটা কিন্তু সত্যি। ক্যারিবিয়ান সমুদ্রসৈকতের কাছে সাগরের অতলে বিশেষ একটি জায়গায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মাছদের সাঁতার কাটতে দেখা যায়। আর এখানেই নির্মিত হয়েছে অভিনব এক জাদুঘর। বর্তমানে এ জাদুঘরে আছে ৪০০টি ভাস্কর্য। এর প্রতিটিই বিভিন্ন মানুষের প্রতিমূর্তি। দেখে মনে হয়, এ যেন জলের নিচে জীবনেরই বাস্তব প্রতিচ্ছবি।

হাতে হাত ধরে গোলাকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একদল নারী কিংবা চেয়ারে বসে টেবিলে রাখা টাইপ মেশিনে কেউ মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আপন মনে। এক বৃদ্ধ মুখে হাই তুলে দাঁড়িয়ে আছেন। আবার একটি শিশু মাথা তুলে তাকিয়ে আছে সূর্যের দিকে। কেউ আবার এরই মধ্যে রয়েছেন সাইকেল রেসে। চলছে গাড়িও। বিমর্ষ কোনো তরুণী অ‍ানমনে শুয়ে আছে তার আপন ভুবনে।

m2মূর্তিগুলো মাছদের দারুণভাবে আকর্ষণ করছে। আসলে মাছগুলোর বুঝে ওঠার উপায় নেই এরা আদৌ জীবন্ত মানুষ কিনা। আর তাই মাঝে মধ্যে এসব মূর্তি বা ভাস্কর্যে মাছগুলো এসে ঠোকর মারছে সত্যিকারের মানুষ ভেবে। সাগরের নিচেও যে সংস্কৃতিমনা প্রাণী আছে, এটা এখন পরীক্ষিত তা বেশ জোর দিয়েই বলা যায়! কি বন্ধুরা! তাই না!

ম্যাক্সিকোর ‘কানকুন মেরিন পার্ক’ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় জাদুঘরটি নির্মিত হয়। ব্রিটিশ শিল্পী জেসন ডেক্লেয়ার্স টেইলর এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। কারণ, তার সমুদ্রের নিচে ভাস্কর্য প্রতিস্থাপন করার অভিজ্ঞতা ছিল। সাগরের পানির নিচে তাই শিল্পী জেসনের ভাস্কর্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বেশি। শিল্পী জেসন পানির নিচের এ ভাস্কর্যগুলোর নাম দিয়েছেন ‘দ্য সাইলেন্ট ইভ্যালিউশন’। আভিধানিক অর্থে যার মানে দাঁড়ায় `নীরব বিবর্তন`।

জাদুঘরটি পানির ৩০ ফুট নিচে অবস্থিত। ব্যতিক্রমধর্মী এ জাদুঘরে ৪০০ মানব ভাস্কর্য তৈরি করেছেন ব্রিটিশ ভাস্কর জেসন টেইলর নিজেই।

এই আর্ট মিউজিয়াম পানির নিচে তৈরি করা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাদুঘর। কৃত্রিম মানবজগতের এ জাদুঘরটি স্থায়ীভাবেই এখানে থাকবে।

সামুদ্রিক কোরাল ও শৈবালের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে ভাস্কর্যগুলোতে কৃত্রিম কোরাল ও শৈবাল ব্যবহার করা হয়েছে। ভাস্কর্যগুলো নির্মিত হয়েছে এক বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক সিমেন্ট দিয়ে, যা প্রবাল জন্মাতে সাহায্য করে। ফলে এখানে মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল গড়ে ওঠে। এরই মধ্যে এখানে হাজারো ধরনের মাছ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিত্রশিল্পী টেইলর। এর মধ্যে আছে অ্যাঞ্জেল ফিশ, লবস্টার ও প্রচুর শৈবাল রয়েছে এই তালিকায়।

এই উদ্যানের একটি ভস্কর্যে দেওয়া আছে নকল ফুসফুস। এখানকার বুদ্বুদ বা নিজেদের বয়ে নিয়ে যাওয়া ট্যাংক থেকে অক্সিজেন নিতে পারেন ডুবুরিরা।m1

মেক্সিকোর ওই সমুদ্র সৈকত এমনিতেই পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। তার ওপর ২০১০ সালের শেষের দিকে এ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটা পরিদর্শনে প্রতিবছর কয়েক লাখ পর্যটক আসেন। স্কুবা ডাইভিংয়ের মাধ্যমে পরিদর্শন করতে হয়। এছাড়া যারা স্কুবা ডাইভ পারেন না তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে তা পরিদর্শন করতে পারেন।
 
সমুদ্রের প্রবল ঢেউ বা ঝড় জলোচ্ছ্বাসে ভাস্কর্যগুলো উপড়ে যাবে না বা কোনো ক্ষতি হবে না। এর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

জাদুঘরে থাকা প্রত্যেকের দাঁড়িয়ে থাকার মধ্যে নিজস্ব অভিব্যক্তি আর ব্যস্ততা ফুটে উঠেছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে এক বিশাল কর্মব্যবস্ত মানবজগৎ যেন জীবন্ত হয়ে আছে জলের তলায়।

ভাস্কর্যগুলো তৈরি করা হয়েছে ডাঙাতেই। এগুলো তৈরিতে শিল্পী ব্যবহার করেছেন ১২০ টন সিমেন্ট, বালি ও নুড়ি পাথর, ৩ হাজার ৮০০ মিটার ফাইবার গ্লাস, ৪০০ কেজি সিলিকন ও ৮ হাজার মাইল লম্বা লাল ফিতা।

এছাড়া ৩০ ফুট পানির নিচে সেগুলো স্থাপনের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ১২০ ঘণ্টা। আর পুরো ব্যাপারটিতে খরচ হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।

মজার ব্যাপার হলো- ভাস্কর্যগুলো স্থাপনের কাজ করতে গিয়ে শিল্পী ও তার সহযোগীদের ২৫ হাজারবার পিঁপড়া আর মশার কামড় খেতে হয়েছে। এছাড়া সামুদ্রিক মাছের কামড় খেতে হয়েছে ২০ বার। ভাস্কর টেইলর তার অবশ্য সব খরচ আর পরিশ্রমের সঙ্গে মজা করে এই বিষয়টিও যোগ করেছেন।

m4এই ভাস্কর্যগুলোতে এমন সব উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে যে দীর্ঘদিন পানিতে থাকলেও কোনও সমস্যা হবে না। আর পর্যটকদের জন্য এগুলো স্থায়ীভাবে পানিতেই থাকবে।

সাইলেন্স ইভল্যুশনের ভাস্কর্যগুলোর সৌন্দর্য কাচের তলাযুক্ত নৌকায় করেও পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়াও মূর্তিগুলোর ওপর তারা হরেক প্রজাতির মাছ দেখারও সুযোগ পাবেন। বিপদ দেখলে এসব মাছ ভাস্কর্যগুলোর ভেতরে লুকিয়ে পড়ে।

সাগরতলের এ জাদুঘর নির্মাতার ইচ্ছা, অর্থসংস্থান করতে পারলে এখানে আরও ভাস্কর্য যোগ করা হবে। তবে এখনও এই ভাস্কর্যগুলোর নির্মাণ শেষ হয়নি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রকৃতির হাত পড়ার পর এর আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠবে বলে জানিয়েছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, ভাস্কর্যগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি এখানকার আবহাওয়া। এ অঞ্চলে প্রায়ই হারিকেনের মতো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়। তবে কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ভাস্কর্যগুলো প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারবে। তবে ডুবুরি বা ডাইভারদের জন্য কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। ইচ্ছে করলেই এখানে অবাধে সাঁতার কাটতে পারেন তারা। সাঁতারের সঙ্গে সঙ্গে দেখে নেওয়া যাবে নয়নাভিরাম ভাস্কর্যশিল্প।