Wednesday, June 5, 2013

রোমান্টিক ১০

রোমান্টিক ১০
বছর ঘুরে আবার সামনে চলে এলো ভালোবাসার দিনটি। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে আমরা সবাই আমাদের প্রিয় মানুষটার সাথে সময় কাটাতে চাই। কেউবা ঝালাই করে নিই ভালোবাসাময় সেই মিষ্টি অনুভূতিগুলো। অনেকেই পছন্দ করি প্রিয় মানুষটার সাথে বসে সিনেমা দেখতে। আর সেসময় তাদের পছন্দের তালিকায় উঠে আসে কিছু রোমান্টিক সিনেমা। আর তাই আমাদের এবারের আয়োজনে থাকছে বিশ্বসেরা কিছু রোমান্টিক সিনেমার কথা। হয়তো এর মধ্যে থেকে কোনো সিনেমার গল্পটি মিলে যেতে পারে আপনার সাথেও। লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম

কাসাব্ল্যাঙ্কা 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা পর্বে রিক মরোক্কোর কাসাব্ল্যাঙ্কায় একটি ক্যাফে চালু করেন। ক্যাফে হলেও কাসাব্ল্যাঙ্কা এমন এক জায়গা হিসেবে পরিচিতি পায় যেখান জার্মানিতে পালানোর আগে ঠাঁই নেওয়া যায়। এই ক্যাফেতে এসে হাজির হয় তার পুরোনো প্রেমিকা এলসা। সে তার মুক্তিবাহিনীর সেনা স্বামী ভিক্টর লেসোকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে। রিকসের কাছে এমন কিছু তথ্য আছে যার বিনিময়ে এই দুইজনকে সহজেই নিরাপদ এলাকায় পৌঁছানো যাবে এবং সেখানে সে তার সবচেয়ে উত্কৃষ্ট পথটিই বেছে নেয়।

রোমান হলিডে

একটা কন্টিনেন্টাল ট্যুরে এসে প্রিন্সেস আন তার বিভিন্ন নিয়মভারাক্রান্ত আর আনুষ্ঠানিকতাসর্বস্ব জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে রাতে গোপনে পালিয়ে যায়। সেখানে তার সাথে দেখা হয় কাগজের রিপোর্টার জো ব্র্যাডলির সাথে। ব্র্যাডলি তাকে ঠিকানাহীন, মাতাল মেয়ে মনে করে এক রাতের জন্য তার বাসায় আশ্রয় দেয়। এদিকে প্রিন্সেস আন হচ্ছেন রাজ সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারিণী। তার রহস্যজনকভাবে উধাও হওয়ার খবর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এ ভয়ে তা গোপন রাখা হয়। প্রচার করা হয় তিনি অসুস্থ। সকালে অফিসে গিয়ে ব্র্যাডলি জানতে পারেন যে তার বাসায় যে মেয়েটি আছে সে আর কেউ নয়, স্বয়ং প্রিন্সেস আন। এভাবে এগোতে থাকে ছবির কাহিনী। 

রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট

রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট হচ্ছে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়র রচিত একটি বিয়োগান্তক নাটক, যা গড়ে উঠেছে দুজন প্রেমিক-প্রেমিকাকে কেন্দ্র করে। পরবর্তীতে তাদের মৃত্যু বিবাদমান দুই পরিবারকে একত্রিত করে। এটি শেক্সপিয়রের জীবদ্দশায় সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পাঠকনন্দিত নাটক। পরবর্তীতে এটিকে সিনেমায় রূপান্তরিত করা হয়। সিনেমাগুলোর মধ্যে একটিতে অভিনয় করেছিলেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিয়। 

দ্য নোটবুক

সিনেমার শুরুটা হয় একটি নার্সিং হোম থেকে। নার্সিং হোমে চিকিত্সারত এক বৃদ্ধাকে এক বৃদ্ধা নিজের নোটবুক হতে একটি গল্প শোনায়। এই গল্পের প্রধান চরিত্র চল্লিশের দশকের দুই প্রাণবন্ত যুবক-যুবতী অ্যালি এবং নোয়া। গ্রীষ্মের ছুটিতে ধনী বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসা অ্যালির পরিচয় হয় নোয়াহ-এর। অ্যালি উদাসীন থাকার পরেও নোয়াহ'র অতিরিক্ত আগ্রহের কারণে দুজন একে অপরের প্রেমে পড়েন। কিন্তু আর্থিক বৈষম্যের মতো কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। যার ফলে ছুটি শেষে অ্যালির পরিবারের চাপে তাদেরকে আলাদা হতে হয়। একপর্যায়ে যখন তারা দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক, সেসময় অ্যালির বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু অজানা এক আকর্ষণে অ্যালি দেখা করতে যায় নোয়াহ'র সঙ্গে। 

সুইট নভেম্বর

সুন্দরী সারা (শার্লিজ থেরন) এবং নেলসন (কিয়ানু রিভস)- এর প্রেমের গল্প নিয়ে সিনেমা। সারা নেলসনকে ভালোবেসে ফেলে, জানতে পারে নেলসনের অনেক স্বভাব রয়েছে যেগুলোর কারণে তার জীবনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যার। ধীরে ধীরে সারা তাকে সেগুলো থেকে বের করে নিয়ে আসে। সারার সহজ সরল মনোভাব ছুঁয়ে যায় নেলসনকে। প্রেমে পড়ে যায় নেলসনও। এরপর একসময় নেলসন জানতে পারে সারা ক্যান্সারের কথা। জানার পরও পাশে থাকতে চায় নেলসন। কিন্তু সারাকে বেশিদিন ধরে রাখতে পারে না সে। একসময় সারা হারিয়ে যায় চিরদিনের মতো।

ফিফটি ফার্স্ট ডেটস

লাকির (ড্রিউ ব্যারিমোর) সাথে দেখা হওয়ার আগে হেনরি রথ (অ্যাডাম স্যান্ডলার) প্রেমের ব্যাপারে সিরিয়াস ছিল না। কিন্তু লাকিকে দেখে প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে গেল। বেশ পরিশ্রম করে পটিয়ে আনল, ঠিক করল পরেরদিন দেখা হবে আবার। পরেরদিন লাকি এল ঠিকই কিন্তু হেনরিকে চিনতে পারছে না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারল লাকির স্মৃতিশক্তি সীমিত। এক অ্যাক্সিডেন্টের পরে আগের দিনের কথা পরের দিন মনে রাখতে পারে না। হাল ছাড়ে না হেনরি, প্রতিদিন বিভিন্ন কায়দায় লাকির কাছে প্রেম নিবেদন করতে হয়। 

এ ওয়াক টু রিমেম্বার

কাহিনী এক কিশোর আর কিশোরীর। বিদ্যালয়ের জীবনে হঠাত্ করেই মুখোমুখি দুরন্ত কিশোর সেই কিশোরীর যে আচার-আচরণে ধীর-স্থির, ঠিক বেমানান বলা যায়। তারপর একসাথে চলা, কিশোরের মনে অনুভূতির উদয়। কিছুদূর পথ চলা। একসময় তা রূপ নেয় ভালোবাসায়। কিন্তু কিশোর জানে না মেয়েটি ক্যান্সারের শেষ ধাপে রয়েছে। জীবনকে সে স্বাভাবিকভাবেই বেছে নিয়েছে। তারপরে কিশোরী খুলে বলে সবকিছু। কিশোর তার ভালোবাসার সুখের জন্য নিবেদিত করে নিজেকে। তারা দুজন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। একসময় মেয়েটি চলে যায়। রেখে যায় কিছু স্মৃতি, যে স্মৃতি গড়ে নিতে তারা দু'কদম হেঁটেছিল একসাথে।

টাইটানিক

১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রোমান্টিক চলচ্চিত্র। এই সিনেমার পরিচালক, লেখক ও সহ-প্রযোজক হলেন বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব জেমস ক্যামেরন। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিও (জ্যাক ডসন) ও কেট উইন্সলেট (রোজ ডিউইট বিউকেটার)। উচ্চবিত্ত সমাজের মেয়ে রোজের সাথে টাইটানিক জাহাজে নিম্নবিত্ত সমাজের প্রতিভা জ্যাকের প্রেম হয়। ১৯১২ সালে টাইটানিকের পরিণতির পটভূমিতে তাদের এই ট্র্যাজেডিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিটিতে। প্রেমের গল্প আর প্রধান চরিত্রগুলো কাল্পনিক হলেও অনেকগুলো পার্শ্ব চরিত্র ঐতিহাসিক সত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। 

দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে

একটি ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্র, ছবিটি মুক্তি লাভ করে ২০ অক্টোবর, ১৯৯৫ সালে। এটি একটি রোমান্টিক ও কমেডি ধাঁচের ছবি, ছবিটি পরিচালনা করেছেন আদিত্য চোপড়া, এবং এটিই তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। রাজ-সিমরান জুটির এই প্রেম কাহিনী মুক্তির পর বলিউডের বক্স অফিসের সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। এ ছবির শেষ দৃশ্যে রেল স্টেশনে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সময় কাজল আর শাহরুখের দৃশ্যটিকে বিবেচনা করা হয় বলিউডের সর্বকালের সেরা রোমান্টিক দৃশ্য। 

প্রিটি উইমেন

সবসময়কার ভালোবাসা দিবসের শীর্ষ ছবি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে জুলিয়া রবার্টস অভিনীত 'প্রিটি উইমেন' সিনেমাটি। লন্ডনের রেডিও টাইমসের করা এ জরিপে সাড়ে তিন হাজারের বেশি লোক 'প্রিটি উইমেন'কে বেছে নেয় ভালোবাসা দিবসের সেরা ছবি হিসেবে। জুলিয়া রবার্টস (ভিভিয়ান) এবং এডওয়ার্ড (রিচার্ড গিরি) ভূমিকায় অভিনয় করেন। সাধারণ দুটি মানুষের প্রেমের গল্প নিয়ে এগিয়ে চলে সিনেমার কাহিনী।

No comments:

Post a Comment