Saturday, July 27, 2013
স্বপ্নের ওড়াউড়ি
আদরে আদরে ঐশ্বর্যে গরিমায় সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম যার। বড় হয়ে উঠতে উঠতে পুতুলটি নিজেকে শূন্য ভাবা শুরু করল, কী যেন নেই, কী যেন নেই। হাজারো শখের খেলনা, সাজের আয়না, বান্ধবীদের খুনসুটি, ঘোরাঘুরি— সবকিছু ফিকে মনে হতে লাগল। নিজেকে কারও কাছে হারানোর তীব্র আকুতিতে পার হতে লাগল প্রতিটি দিন। ঠিক সে সময়ই ইয়াহু চ্যাটের দরজায় কড়া নাড়ল একটি ছেলে। মায়াভরা দুই চোখ। দুজনার কথায় উড়তে লাগল সব রং-বেরঙের স্বপ্ন। সপ্তাহান্তের রাতে ঢাকা থেকে কয়েক শ কিলোমিটারও তখন কিছু নয়, স্পর্শগুলো তখন নিজেকে বেঁচে থাকার প্রেরণা দেয়, আকাশের নীলগুলো মুঠোয় পুরে ফেলতে ইচ্ছা করে...।
এরপর হঠাৎই মা-বাবা মেয়েটির কাছে আনে এক রাজপুত্রকে, সুদর্শন সেই যুবক করপোরেট চাকরি নামক কঠিন এক চাবি হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে। মেয়েটি ছেলেটির স্বপ্নগুলো হারাতে লাগল। বুঝতেও পারল না, ধীরে ধীরে সে হীরা নয় কাচ বেছে নিতে যাচ্ছে। অর্থনীতি আর সাদা চামড়া তার চোখে পরাল রঙিন চশমা। বান্ধবীদের সায় তাকে দিল প্রেমিককে ভুলে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। বন্ধ হলো স্বপ্ন ও প্রজাপতির ওড়াউড়ি।
বেশ কিছুদিন পর ছেলেটির পড়াশোনা শেষ করতে পারার আগেই মেয়েটি মালা দিল মা-বাবার নির্দিষ্ট করা করপোরেট রাজপুত্রের গলায়। কিন্তু শেষমেশ প্রতিষ্ঠা আর সুন্দর চেহারা মেয়েটির প্রেমিকের ভালোবাসার কাছে পরাজিত হলো। কিছু ভুল থেকে আর ফেরা যায় না। ছেলেটি বিস্ময় নিয়ে নতুন করে ফিরে পাওয়ার আকুতিতে আবারও উদ্বেল। কিন্তু নাহ্, আর না। অনেক দিন পরের গল্প...পুতুলটি তার স্বামীর কাছে নারী হয়ে, শাড়ি গয়নায় মুড়িয়ে মুগ্ধ হতে হতে দিন পার করছে ড্রেসিং টেবিলের সামনে। ছেলেটি মেঘের কাছে মন বিক্রি করে পথ চলতে থাকে, অজানা অপেক্ষায়...।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment