ভালোবাসার নির্বাচিত ১০০ গান
'ভালোবাসা'—এক শব্দের মিষ্টি অভিব্যক্তি। এত সুন্দর আর কোনো শব্দ বোধহয় অভিধানে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর ভালোবাসার সেই মিষ্টি মধুর সময়ে প্রেমিক-প্রেমিকার অনুভূতি নিয়ে যুগে যুগে জন্ম নিয়েছে শত শত গীতিকবিতা। আমাদের বাংলা গানের সুরের ভুবনেও ভালোবাসা এক অনন্য বিষয়বস্তু। বহুগুণী শিল্পীর কাছ থেকে আমরা সময়ে সময়ে পেয়েছি ভালোবাসার গান। পাঠক-পাঠিকাদের মনের আঙিনায় মুঠো মুঠো ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন সময়ের ১০০টি জনপ্রিয় ভালোবাসার গান নির্বাচন করেছি। ক্যাটাগরি অনুযায়ী আমরা গানগুলোকে সাজিয়েছি। আশা করছি আমাদের পছন্দের সাথে মিলে যাবে আপনাদের পছন্দও। লিখেছেন মুহম্মদ কবীর
ফোক
মহুয়া-মলুয়া আর লালন-হাছনের এই বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি সম্পদ লোকসংগীত। দেশের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো মরমী শিল্পীর বহু কালজয়ী গান। আবদুল আলীম, আব্বাস উদ্দিন, উকিল মুন্সী, আবদুল করিমের মতো মাটিঘেঁষা শিল্পীরা দেশীয় গানকে বিকশিত করেছেন। এইসব ফোক গান নিয়ে আজকাল নানা রকম এক্সপেরিমেন্টও হচ্ছে। কোনো রকম এক্সপেরিমেন্টে না গিয়ে কালজয়ী কিছু প্রেমের ফোকগানের প্রতি আলোকপাত করা হলো।
সোনাবন্ধু তুই আমারে করলি রে দিওয়ানা
মনে তো মানে না, প্রাণে তো বুঝে না...
বন্ধে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে
দিওয়ানা বানাইছে...
কৃষ্ণ আইলা রাঁধার কুঞ্জে
ফুলে পাইলা ভ্রমরা ময়ূর বেশেতে নাচে...
প্রাণসখীরে ঐ শোন কদম্ব তলে
বংশী বাজায় কে...
সোনা বন্ধে আমারে দিওয়ানা বানাইছে
সোনা বন্ধে আমারে পাগল বানাইছে...
ঘাটে লাগাইয়া ডিঙা
পান খাইয়া যাও মাঝি...
ময়না ছলাত্ ছলাত্ করে রে
পেছন পানে চায়না রে...
ছাইড়া দে কলসী আমার যায় বেলা
না না ছাড়তাম না কলসী তোমার...
রূপসাগরে ঝলক মারিয়া
কি রূপ তুই দেখাইলি মোরে...
নিশিথে যাইও ফুলবনে রে ভোমরা
নিশিথে যাইও ফুলবনে...
আধুনিক
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার নামই তো আধুনিকতা। সময়ের প্রয়োজন মেটানোর জন্যই আধুনিক শিল্পীরা গান গেয়ে থাকেন। আধুনিক গানের শিল্পীরও এ দেশে অভাব নেই। তবে জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে অল্প কয়েকজনই জয় করতে পেরেছেন সাধারণ মানুষের অন্তর। আধুনিক গানের অন্যতম উপাদান ভালোবাসা। অনেক আধুনিক ভালোবাসার গান সময়কে ডিঙিয়ে টিকে আছে স্বকীয় মর্যাদায়। মনে রাখার মতো ভালোবাসার আধুনিক কিছু গানের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া যাক।
তুমি যদি বলো পদ্মা মেঘনা
এক সাথে দেবো পাড়ি... (কুমার বিশ্বজিত্)
নীল চাঁদোয়া নীল চাঁদোয়া
আকাশটাকে আজ লাগছে যেন... (শুভ্রদেব)
এই ঝিনুক ফোটা সাগরবেলায়
আমার ইচ্ছে করে... (সামিনা নবী)
তুমি আমার প্রথম সকাল
একাকী বিকেল, ক্লান্ত দুপুর বেলা... (তপন চৌধুরী/শাকিলা জাফর)
পাগল তোর জন্যরে পাগল এই মন... (বেলাল/ন্যান্সি)
ভালোবাসি বড় ভালোবাসি ... (শফিক তুহিন/পড়শী)
ওরে সব ভালো তুই একা বাসিস নে
একটু ভালোবাসতে দিস মোরে... (আইয়ুব বাচ্চু)
দিন গেল তোমার পথ চাহিয়া... (হাবিব)
তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে
হূদয়ের কোঠরে রাখব... (কুমার বিশ্বজিত্)
দিন যায় আমার প্রেম যায় বেড়ে... (হাবিব)
ব্যান্ড
পশ্চিম থেকে এলেও দেশীয় মহিমায় এ দেশে বিকশিত হয়েছে ব্যান্ড সংগীত। তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ব্যান্ডের গানে বারবার এসেছে ভালোবাসা। পঞ্চাশের দশকে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় জাগানো বিটলস ব্যান্ডের পথ ধরে ষাটের দশকে বাংলাদেশে ব্যান্ড মিউজিকের সূচনা। স্বাধীনতার আগে আইওলাইটস্ আর লাইটিংস সীমিত পরিসরে এ দেশে ব্যান্ড সংগীত চর্চা শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর উচ্চারণ, সোলস, ফিডব্যাক, মাইলস প্রভৃতি ব্যান্ড এ ধারার মিউজিককে জনপ্রিয় করে তোলে। আশির দশকে এলআরবি, অবসকিউর, ফিলিংস (নগরবাউল), প্রমিথিউস, চাইম, নোভা, ডিফারেন্ট টাচ, রেনেসাঁ প্রভৃতি ব্যান্ড তাদের গানকে ছড়িয়ে দেয় সারাদেশের আনাচে-কানাচে। সময়ের নানা বাঁকে বেশ কিছু জনপ্রিয় রোমান্টিক গান উপহার দিয়েছে বিভিন্ন ব্যান্ড। অনেক ব্যান্ড বর্তমানে টিকে না থাকলেও তাদের ভালোবাসার গানগুলো এখনও মনে রেখেছে ব্যান্ডপ্রিয় শ্রোতারা। পাঠক, একবার মিলিয়ে দেখতে পারেন আপনার পছন্দের সঙ্গে আমাদের বাছাই মেলে কি না!
মন শুধু মন ছুঁয়েছে
ও সে তো মুখ খোলেনি... (সোলস)
চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি
নও পাহাড়ি ঝরনা... (মাইলস)
চুপ চুপ চুপ অনামিকা চুপ কথা বলো না
তুমি আমি এইখানে... (উচ্চারণ/আজম খান)
কেন খুলেছ তোমারই জানালা
কেন তাকিয়ে রয়েছ... (ফিডব্যাক)
আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো
তুমি আমার... (নগরবাউল)
নির্জন শালবনে গুঞ্জন মনে মনে
মন কি যে চায় কিছু বলতে তোমায়... (প্রমিথিউস)
সজনী সাঁঝেরও তারা হয়ে
কেন আমার আকাশে এলে... (নোভা)
মন কি যে চায় বলো
যারে দেখি লাগে ভালো... (ডিফরেন্ট টাচ)
তুমি জানো নারে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা... (চাইম)
তুমি আমার বায়ান্ন তাস
শেষ দানেও আছি... (দলছুট)
ঐ লাল শাড়ি রে
নিশি রাইতে যায় কোন বনে... (অরবিট)
অনুভবে কল্পনাতে যে মিশে রও
হাসির ইশারাতে রজনীগন্ধা ফোটাও... (সিম্ফনি)
ছোট্টবেলার মতো এসো
ফুল তুলিতে যাই... (মনিটর)
মৌনতা আছে দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে-হূদয়ে
তবু নেই তো কোনো দুঃখ এই মনে... (ওয়ার ফেজ)
ওগো সোনা মেয়ে, বলো না কি পেয়েছ
হূদয় ভুলে আপন ভুলে... (উইনিং)
ফিল্ম
এ দেশের চলচ্চিত্রে গান সব সময়ই একটা বড় উপাদান। শুধু সুন্দর গানের কারণেই অনেক ছবি সুপার হিট ব্যবসা করার অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। দেশের খ্যাতিমান প্রায় সব শিল্পীই কমবেশি সিনেমার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। একটা সময় চলচ্চিত্রের গানের উপরই নির্ভর করত মিউজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট। এ দেশে যেমন ভালোবাসার গল্প নিয়ে অসংখ্য ফিল্ম তৈরি হয়েছে, তেমনি ফিল্ম থেকে আমরা পেয়েছি মনে রাখার মতো অসংখ্য প্রেমের গান। তবে আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম জনপ্রিয়তা পাচ্ছে চলচ্চিত্রের গান। তবু চলচ্চিত্র থেকেই এ দেশের শ্রোতারা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার গান পেয়েছে। কিছু কিছু গান তো মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। আসুন, ফিল্মের কিছু জনপ্রিয় প্রেমের গানের কথা মনে করি।
আমার বুকের মধ্যখানে
মন যেখানে হূদয় যেখানে... (নয়নের আলো)
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে মিশে গেছে... (ঘুড্ডি)
এই বুকে বইছে যমুনা ... (প্রেমের তাজমহল)
কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে
আমার হয়েছে কোনটা... (ব্যাচেলর)
প্রেমি ও প্রেমি, দেখা দাও তুমি... (মনের মাঝে তুমি)
তুমি যে আমার কবিতা
আমারও গানের রাগিনী... (দর্পচূর্ণ)
পড়ে না চোখের পলক
কি তোমার রূপের ঝলক... (প্রাণের চেয়ে প্রিয়)
আমি একদিন তোমায় না দেখিলে
তোমার মুখের কথা না শুনিলে... (দুই জীবন)
ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু তোমায় যতনে ....( হূদয়ের কথা)
প্রেমের দরোজা খোলো না
কাল কি হবে জানি না... (মিন্টু আমার নাম)
এক যে ছিল সোনার কন্যা মেঘবরণ কেশ
ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কন্যার দেশ... (শ্রাবণ মেঘের দিন)
সব সখীরে পার করিতে
নেব আনা আনা... (সুজন সখী)
আমার গরুর গাড়িতে
বউ সাজিয়ে... (আঁখি মিলন)
বাহির বলে দূরে থাকুক
ভিতর বলে আসুক না... (থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার)
চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে
জেনে যাবে কেউ... (নিশান)
এখন তো সময় ভালোবাসার
এ দুটি হূদয় কাছে আসার... (কেয়ামত থেকে কেয়ামত)
কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো
সে কথা তুমি যদি জানতে... (উসিলা)
তোমাকে দেখলে একবার
মরিতে পারি শতবার (চাঁদনী রাতে)
নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধুরে... (মনপুরা)
এখানে দুজনে নির্জনে
সাজাব প্রেমের পৃথিবী... (অন্তরে অন্তরে)
আমি তোমার মনের ভিতর একবার ঘুরে আসতে চাই... (এইতো প্রেম)
তুমি আমার মনের মাঝি
আমার পরাণ পাখি... (ঝিনুকমালা)
চোখ যে মনের কথা বলে
চোখের সে ভাষা... (যে আগুনে পুড়ি)
এ কি সোনার আলোয়
জীবন ভরিয়ে দিলে ওগো বন্ধু... (মনের মতো বউ)
জীবনও আঁধারে পেয়েছি তোমারে
চিরদিন কাছে থেকো বন্ধু... (পুত্রবধূ)
ভারতীয় বাংলা
আমাদের এই বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাগানের চর্চা বহু যুগ ধরে চলে আসছে। সংগীতের কয়েকটি ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে আজও এগিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা গান। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে এইসব স্বর্ণালি গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার, মান্না দে, লতা মুঙ্গেশকার, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ধ্রুপদী শিল্পীদের ভালোবাসার গান প্রেমিক-প্রেমিকার অন্তরে নানা সময় ঝড় তুলেছে। ব্যাকুল মন নিয়ে এসব শিল্পীর ভালোবাসার গানে প্রেমিক-প্রেমিকা খুঁজেছে অনুভবের ফল্গুধারা। বিশাল এই সংগীত ভাণ্ডার থেকে আলাদাভাবে গান বাছাই করতে আমাদের রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছে।
যদি হিমালয় আল্পসের সমস্ত জমাট বরফ
একদিন গলেও যায় তবুও তুমি আমার... (মান্না দে)
তুমি একজনই শুধু বন্ধু আমার
শত্রুও তুমি একজন তাই... (মান্না দে)
আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি
তবু মনে হয় এ যেন গো... (মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়)
হাওয়ায় মেঘ সরায়ে ফুল ঝরায়ে
ঝিরিঝিরি এলে বহিয়া... (কিশোর কুমার)
আমি দূর হতে তোমারে দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আকাশ এত মেঘলা
যেও নাকো একলা... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে
সাত সাগর তের নদীর পাড়ে... (শ্যামল মিত্র)
বাঁশি শুনে আর কাজ নেই
সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি... (শচীন দেব বর্মণ)
এই রাত তোমার আমার
এই চাঁদ তোমার আমার... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
দুটি মন আজ নেই দুজনার
রাত বলে আমি সাথি হবো যে... (চিত্রা সিং)
এ শুধু গানের দিন
এ লগন গান শোনাবার (সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়)
চিরদিনই তুমি যে আমার
যুগে যুগে আমি তোমারই... (লতা/কিশোর)
আমি যে কে তোমার
তুমি তা বুঝে নাও... (লতা/কিশোর)
ময়ূরকণ্ঠী রাতেরও নীলে
আকাশে তারাদের ঐ মিছিলে... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আজ কিছু হতে চলেছে
সে আমায় কথা দিয়েছে... (জগজিত্ সিং)
এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকে না তো মন (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
শুনো গো দখিন হাওয়া
প্রেমে পড়েছি আমি... (শচীন দেব বর্মণ)
প্রথমত আমি তোমাকে চাই... (কবীর সুমন)
তুমি না থাকলে সকালটা
এত মিষ্টি হতো না... (অঞ্জন দত্ত)
লাল ফিতে সাদা মোজা
স্কুল ইউনিফর্ম... (নচিকেতা)
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ
এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না... (অঞ্জন দত্ত)
বাংলা গানে ভালোবাসা সব সময়ই একটা মুখ্য উপাদান। এসব ভালোবাসার গানের বেশিরভাগই কালকে অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে ভবিষ্যতে। বিনোদন-এর পাঠক-পাঠিকাদের জন্য আমরা ১০০টি ভালোবাসার গান সংকলিত করেছি, আপনাদের সুবিধার জন্য। এখান থেকে গান বাছাই করে আপনি নিজে সংগ্রহ করতে পারেন কিংবা প্রিয়জনকে উপহার দিতে পারেন। আপনার মনের গহীন কোণে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে সেরা মাধ্যম হলো গান,
এ কথার সঙ্গে নিশ্চয়ই আপনিও একমত হবেন। আর যারা এ বছরের ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করছেন ভালোবাসার শহীদ দিবস হিসেবে তাদের জন্যও আমরা একটা গান খুঁজে বের করেছি। ভুল বুঝে অভিমানে কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই স্বার্থের প্রয়োজনে আপনাকে ছেড়ে যাওয়া একসময়ের প্রিয় মানুষটিকে শুনিয়ে দিতে পারেন তরুণ
শিল্পী জয় শাহরিয়ারের এই আধুনিক গানটি 'সত্যি বলছি তোমাকে আর ভালোবাসি
না'।
ভালোবাসি ভালোবাসি
এই সুরে কাছে দূরের...
আমারও পরাণও যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাই গো...
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে
দেখতে আমি পাইনি...
ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে
আমার নামটি লিখো...
কতোবারও ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমারও চরণে দিবো...
সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা...
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগনের তারা...
হূদয়ের একূল-ওকূল দুকূল
ভেসে যায় হায় সজনী...
যে ছিল আমার স্বপনচারিনী
তারে বুঝিতে পারিনি...
দোলাও দোলাও দোলাও আমার হূদয়
তোমার আপন হাতের মুঠোয়...
মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী
দেব খোঁপায় তারার ফুল...
এনেছি আমার শতজনমের প্রেম
আঁখিজলে গাঁথা মালা...
পায়ে বিঁধেছে কাঁটা
সজনী ধীরে চল...
মোরা আর জনমে হংসমিথুন ছিলাম
ছিলাম নদীরও জলে যুগল রূপে...
চেয়ো না সুনয়না আর চেয়ো না
এ নয়ন পানে...
আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম প্রিয়
আমার কথার ফুল গো...
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সে কি মোর অপরাধ...
প্রিয় যাই যাই বলো না
আর করো না ছলনা...
যত ফুল তত ভুল কণ্টক জাগে
মাটির পৃথিবী তাই এত ভালো লাগে...
তুমি কি এখন দেখেছ স্বপন
আমারে আমারে আমারে...
ফোক
মহুয়া-মলুয়া আর লালন-হাছনের এই বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি সম্পদ লোকসংগীত। দেশের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো মরমী শিল্পীর বহু কালজয়ী গান। আবদুল আলীম, আব্বাস উদ্দিন, উকিল মুন্সী, আবদুল করিমের মতো মাটিঘেঁষা শিল্পীরা দেশীয় গানকে বিকশিত করেছেন। এইসব ফোক গান নিয়ে আজকাল নানা রকম এক্সপেরিমেন্টও হচ্ছে। কোনো রকম এক্সপেরিমেন্টে না গিয়ে কালজয়ী কিছু প্রেমের ফোকগানের প্রতি আলোকপাত করা হলো।
সোনাবন্ধু তুই আমারে করলি রে দিওয়ানা
মনে তো মানে না, প্রাণে তো বুঝে না...
বন্ধে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে
দিওয়ানা বানাইছে...
কৃষ্ণ আইলা রাঁধার কুঞ্জে
ফুলে পাইলা ভ্রমরা ময়ূর বেশেতে নাচে...
প্রাণসখীরে ঐ শোন কদম্ব তলে
বংশী বাজায় কে...
সোনা বন্ধে আমারে দিওয়ানা বানাইছে
সোনা বন্ধে আমারে পাগল বানাইছে...
ঘাটে লাগাইয়া ডিঙা
পান খাইয়া যাও মাঝি...
ময়না ছলাত্ ছলাত্ করে রে
পেছন পানে চায়না রে...
ছাইড়া দে কলসী আমার যায় বেলা
না না ছাড়তাম না কলসী তোমার...
রূপসাগরে ঝলক মারিয়া
কি রূপ তুই দেখাইলি মোরে...
নিশিথে যাইও ফুলবনে রে ভোমরা
নিশিথে যাইও ফুলবনে...
আধুনিক
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার নামই তো আধুনিকতা। সময়ের প্রয়োজন মেটানোর জন্যই আধুনিক শিল্পীরা গান গেয়ে থাকেন। আধুনিক গানের শিল্পীরও এ দেশে অভাব নেই। তবে জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে অল্প কয়েকজনই জয় করতে পেরেছেন সাধারণ মানুষের অন্তর। আধুনিক গানের অন্যতম উপাদান ভালোবাসা। অনেক আধুনিক ভালোবাসার গান সময়কে ডিঙিয়ে টিকে আছে স্বকীয় মর্যাদায়। মনে রাখার মতো ভালোবাসার আধুনিক কিছু গানের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া যাক।
তুমি যদি বলো পদ্মা মেঘনা
এক সাথে দেবো পাড়ি... (কুমার বিশ্বজিত্)
নীল চাঁদোয়া নীল চাঁদোয়া
আকাশটাকে আজ লাগছে যেন... (শুভ্রদেব)
এই ঝিনুক ফোটা সাগরবেলায়
আমার ইচ্ছে করে... (সামিনা নবী)
তুমি আমার প্রথম সকাল
একাকী বিকেল, ক্লান্ত দুপুর বেলা... (তপন চৌধুরী/শাকিলা জাফর)
পাগল তোর জন্যরে পাগল এই মন... (বেলাল/ন্যান্সি)
ভালোবাসি বড় ভালোবাসি ... (শফিক তুহিন/পড়শী)
ওরে সব ভালো তুই একা বাসিস নে
একটু ভালোবাসতে দিস মোরে... (আইয়ুব বাচ্চু)
দিন গেল তোমার পথ চাহিয়া... (হাবিব)
তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে
হূদয়ের কোঠরে রাখব... (কুমার বিশ্বজিত্)
দিন যায় আমার প্রেম যায় বেড়ে... (হাবিব)
ব্যান্ড
পশ্চিম থেকে এলেও দেশীয় মহিমায় এ দেশে বিকশিত হয়েছে ব্যান্ড সংগীত। তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ব্যান্ডের গানে বারবার এসেছে ভালোবাসা। পঞ্চাশের দশকে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় জাগানো বিটলস ব্যান্ডের পথ ধরে ষাটের দশকে বাংলাদেশে ব্যান্ড মিউজিকের সূচনা। স্বাধীনতার আগে আইওলাইটস্ আর লাইটিংস সীমিত পরিসরে এ দেশে ব্যান্ড সংগীত চর্চা শুরু করে। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার পর উচ্চারণ, সোলস, ফিডব্যাক, মাইলস প্রভৃতি ব্যান্ড এ ধারার মিউজিককে জনপ্রিয় করে তোলে। আশির দশকে এলআরবি, অবসকিউর, ফিলিংস (নগরবাউল), প্রমিথিউস, চাইম, নোভা, ডিফারেন্ট টাচ, রেনেসাঁ প্রভৃতি ব্যান্ড তাদের গানকে ছড়িয়ে দেয় সারাদেশের আনাচে-কানাচে। সময়ের নানা বাঁকে বেশ কিছু জনপ্রিয় রোমান্টিক গান উপহার দিয়েছে বিভিন্ন ব্যান্ড। অনেক ব্যান্ড বর্তমানে টিকে না থাকলেও তাদের ভালোবাসার গানগুলো এখনও মনে রেখেছে ব্যান্ডপ্রিয় শ্রোতারা। পাঠক, একবার মিলিয়ে দেখতে পারেন আপনার পছন্দের সঙ্গে আমাদের বাছাই মেলে কি না!
মন শুধু মন ছুঁয়েছে
ও সে তো মুখ খোলেনি... (সোলস)
চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি
নও পাহাড়ি ঝরনা... (মাইলস)
চুপ চুপ চুপ অনামিকা চুপ কথা বলো না
তুমি আমি এইখানে... (উচ্চারণ/আজম খান)
কেন খুলেছ তোমারই জানালা
কেন তাকিয়ে রয়েছ... (ফিডব্যাক)
আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো
তুমি আমার... (নগরবাউল)
নির্জন শালবনে গুঞ্জন মনে মনে
মন কি যে চায় কিছু বলতে তোমায়... (প্রমিথিউস)
সজনী সাঁঝেরও তারা হয়ে
কেন আমার আকাশে এলে... (নোভা)
মন কি যে চায় বলো
যারে দেখি লাগে ভালো... (ডিফরেন্ট টাচ)
তুমি জানো নারে প্রিয়
তুমি মোর জীবনের সাধনা... (চাইম)
তুমি আমার বায়ান্ন তাস
শেষ দানেও আছি... (দলছুট)
ঐ লাল শাড়ি রে
নিশি রাইতে যায় কোন বনে... (অরবিট)
অনুভবে কল্পনাতে যে মিশে রও
হাসির ইশারাতে রজনীগন্ধা ফোটাও... (সিম্ফনি)
ছোট্টবেলার মতো এসো
ফুল তুলিতে যাই... (মনিটর)
মৌনতা আছে দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে-হূদয়ে
তবু নেই তো কোনো দুঃখ এই মনে... (ওয়ার ফেজ)
ওগো সোনা মেয়ে, বলো না কি পেয়েছ
হূদয় ভুলে আপন ভুলে... (উইনিং)
ফিল্ম
এ দেশের চলচ্চিত্রে গান সব সময়ই একটা বড় উপাদান। শুধু সুন্দর গানের কারণেই অনেক ছবি সুপার হিট ব্যবসা করার অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে। দেশের খ্যাতিমান প্রায় সব শিল্পীই কমবেশি সিনেমার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। একটা সময় চলচ্চিত্রের গানের উপরই নির্ভর করত মিউজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট। এ দেশে যেমন ভালোবাসার গল্প নিয়ে অসংখ্য ফিল্ম তৈরি হয়েছে, তেমনি ফিল্ম থেকে আমরা পেয়েছি মনে রাখার মতো অসংখ্য প্রেমের গান। তবে আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম জনপ্রিয়তা পাচ্ছে চলচ্চিত্রের গান। তবু চলচ্চিত্র থেকেই এ দেশের শ্রোতারা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসার গান পেয়েছে। কিছু কিছু গান তো মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। আসুন, ফিল্মের কিছু জনপ্রিয় প্রেমের গানের কথা মনে করি।
আমার বুকের মধ্যখানে
মন যেখানে হূদয় যেখানে... (নয়নের আলো)
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে মিশে গেছে... (ঘুড্ডি)
এই বুকে বইছে যমুনা ... (প্রেমের তাজমহল)
কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে
আমার হয়েছে কোনটা... (ব্যাচেলর)
প্রেমি ও প্রেমি, দেখা দাও তুমি... (মনের মাঝে তুমি)
তুমি যে আমার কবিতা
আমারও গানের রাগিনী... (দর্পচূর্ণ)
পড়ে না চোখের পলক
কি তোমার রূপের ঝলক... (প্রাণের চেয়ে প্রিয়)
আমি একদিন তোমায় না দেখিলে
তোমার মুখের কথা না শুনিলে... (দুই জীবন)
ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু তোমায় যতনে ....( হূদয়ের কথা)
প্রেমের দরোজা খোলো না
কাল কি হবে জানি না... (মিন্টু আমার নাম)
এক যে ছিল সোনার কন্যা মেঘবরণ কেশ
ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কন্যার দেশ... (শ্রাবণ মেঘের দিন)
সব সখীরে পার করিতে
নেব আনা আনা... (সুজন সখী)
আমার গরুর গাড়িতে
বউ সাজিয়ে... (আঁখি মিলন)
বাহির বলে দূরে থাকুক
ভিতর বলে আসুক না... (থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার)
চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে
জেনে যাবে কেউ... (নিশান)
এখন তো সময় ভালোবাসার
এ দুটি হূদয় কাছে আসার... (কেয়ামত থেকে কেয়ামত)
কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো
সে কথা তুমি যদি জানতে... (উসিলা)
তোমাকে দেখলে একবার
মরিতে পারি শতবার (চাঁদনী রাতে)
নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধুরে... (মনপুরা)
এখানে দুজনে নির্জনে
সাজাব প্রেমের পৃথিবী... (অন্তরে অন্তরে)
আমি তোমার মনের ভিতর একবার ঘুরে আসতে চাই... (এইতো প্রেম)
তুমি আমার মনের মাঝি
আমার পরাণ পাখি... (ঝিনুকমালা)
চোখ যে মনের কথা বলে
চোখের সে ভাষা... (যে আগুনে পুড়ি)
এ কি সোনার আলোয়
জীবন ভরিয়ে দিলে ওগো বন্ধু... (মনের মতো বউ)
জীবনও আঁধারে পেয়েছি তোমারে
চিরদিন কাছে থেকো বন্ধু... (পুত্রবধূ)
ভারতীয় বাংলা
আমাদের এই বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাগানের চর্চা বহু যুগ ধরে চলে আসছে। সংগীতের কয়েকটি ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে আজও এগিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা গান। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে এইসব স্বর্ণালি গান। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার, মান্না দে, লতা মুঙ্গেশকার, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ধ্রুপদী শিল্পীদের ভালোবাসার গান প্রেমিক-প্রেমিকার অন্তরে নানা সময় ঝড় তুলেছে। ব্যাকুল মন নিয়ে এসব শিল্পীর ভালোবাসার গানে প্রেমিক-প্রেমিকা খুঁজেছে অনুভবের ফল্গুধারা। বিশাল এই সংগীত ভাণ্ডার থেকে আলাদাভাবে গান বাছাই করতে আমাদের রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়েছে।
যদি হিমালয় আল্পসের সমস্ত জমাট বরফ
একদিন গলেও যায় তবুও তুমি আমার... (মান্না দে)
তুমি একজনই শুধু বন্ধু আমার
শত্রুও তুমি একজন তাই... (মান্না দে)
আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি
তবু মনে হয় এ যেন গো... (মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়)
হাওয়ায় মেঘ সরায়ে ফুল ঝরায়ে
ঝিরিঝিরি এলে বহিয়া... (কিশোর কুমার)
আমি দূর হতে তোমারে দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আকাশ এত মেঘলা
যেও নাকো একলা... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে
সাত সাগর তের নদীর পাড়ে... (শ্যামল মিত্র)
বাঁশি শুনে আর কাজ নেই
সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি... (শচীন দেব বর্মণ)
এই রাত তোমার আমার
এই চাঁদ তোমার আমার... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
দুটি মন আজ নেই দুজনার
রাত বলে আমি সাথি হবো যে... (চিত্রা সিং)
এ শুধু গানের দিন
এ লগন গান শোনাবার (সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়)
চিরদিনই তুমি যে আমার
যুগে যুগে আমি তোমারই... (লতা/কিশোর)
আমি যে কে তোমার
তুমি তা বুঝে নাও... (লতা/কিশোর)
ময়ূরকণ্ঠী রাতেরও নীলে
আকাশে তারাদের ঐ মিছিলে... (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
আজ কিছু হতে চলেছে
সে আমায় কথা দিয়েছে... (জগজিত্ সিং)
এই মেঘলা দিনে একলা
ঘরে থাকে না তো মন (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)
শুনো গো দখিন হাওয়া
প্রেমে পড়েছি আমি... (শচীন দেব বর্মণ)
প্রথমত আমি তোমাকে চাই... (কবীর সুমন)
তুমি না থাকলে সকালটা
এত মিষ্টি হতো না... (অঞ্জন দত্ত)
লাল ফিতে সাদা মোজা
স্কুল ইউনিফর্ম... (নচিকেতা)
চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ
এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না... (অঞ্জন দত্ত)
বাংলা গানে ভালোবাসা সব সময়ই একটা মুখ্য উপাদান। এসব ভালোবাসার গানের বেশিরভাগই কালকে অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে ভবিষ্যতে। বিনোদন-এর পাঠক-পাঠিকাদের জন্য আমরা ১০০টি ভালোবাসার গান সংকলিত করেছি, আপনাদের সুবিধার জন্য। এখান থেকে গান বাছাই করে আপনি নিজে সংগ্রহ করতে পারেন কিংবা প্রিয়জনকে উপহার দিতে পারেন। আপনার মনের গহীন কোণে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে সেরা মাধ্যম হলো গান,
এ কথার সঙ্গে নিশ্চয়ই আপনিও একমত হবেন। আর যারা এ বছরের ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করছেন ভালোবাসার শহীদ দিবস হিসেবে তাদের জন্যও আমরা একটা গান খুঁজে বের করেছি। ভুল বুঝে অভিমানে কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই স্বার্থের প্রয়োজনে আপনাকে ছেড়ে যাওয়া একসময়ের প্রিয় মানুষটিকে শুনিয়ে দিতে পারেন তরুণ
শিল্পী জয় শাহরিয়ারের এই আধুনিক গানটি 'সত্যি বলছি তোমাকে আর ভালোবাসি
না'।
ভালোবাসি ভালোবাসি
এই সুরে কাছে দূরের...
আমারও পরাণও যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাই গো...
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়েছিলে
দেখতে আমি পাইনি...
ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে
আমার নামটি লিখো...
কতোবারও ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমারও চরণে দিবো...
সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা...
তুমি কোন কাননের ফুল
কোন গগনের তারা...
হূদয়ের একূল-ওকূল দুকূল
ভেসে যায় হায় সজনী...
যে ছিল আমার স্বপনচারিনী
তারে বুঝিতে পারিনি...
দোলাও দোলাও দোলাও আমার হূদয়
তোমার আপন হাতের মুঠোয়...
মোর প্রিয়া হবে এসো রাণী
দেব খোঁপায় তারার ফুল...
এনেছি আমার শতজনমের প্রেম
আঁখিজলে গাঁথা মালা...
পায়ে বিঁধেছে কাঁটা
সজনী ধীরে চল...
মোরা আর জনমে হংসমিথুন ছিলাম
ছিলাম নদীরও জলে যুগল রূপে...
চেয়ো না সুনয়না আর চেয়ো না
এ নয়ন পানে...
আকাশে আজ ছড়িয়ে দিলাম প্রিয়
আমার কথার ফুল গো...
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সে কি মোর অপরাধ...
প্রিয় যাই যাই বলো না
আর করো না ছলনা...
যত ফুল তত ভুল কণ্টক জাগে
মাটির পৃথিবী তাই এত ভালো লাগে...
তুমি কি এখন দেখেছ স্বপন
আমারে আমারে আমারে...
No comments:
Post a Comment