মানসিক রোগ সংক্রান্ত দুর্ভোগ সামাল দিতে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্বের সব দেশকে একযোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মনরোগ বিশেষজ্ঞরা। মানসিক রোগ-ব্যাধিকে দুর্ভোগ ও পঙ্গুত্ব সৃষ্টির প্রধান কারণ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তারা। বিশ্বে মানসিক রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা প্রায় ৪৫ কোটি এবং এদের তিন চতুর্থাংশই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বসবাস করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা 'হু'-এর হিসাবে উন্নয়নশীল বিশ্বে বসবাসকারী মানসিক রোগীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে আটজনই কোনো চিকিতসা পান না। এদের মধ্যে অনেকেই সংক্রমণজনিত অসুখ-বিসুখ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন।
মনরোগ বিশেষজ্ঞরা মানসিক রোগীর দিক দিয়ে আফগানিস্তানকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনী ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়ে দেশটি দখল করে নেয় এবং তখন থেকে দেশটিতে যুদ্ধ চলছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, দেশটির ১৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের অর্ধেকই মানসিক পীড়ন, উদ্বেগ বা আঘাতোত্তর মানসিক পীড়ন বা পোস্ট ট্রোমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। অথচ দেশটির রাজধানী কাবুলের বাইরে কোনো মানসিক চিকিতসা কেন্দ্র নেই।
কেবল আফগানিস্তানে নয় বরং বিশ্বের অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও একই চিত্র দেখা যাবে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বসবাস করেন এমন সব দেশে যেখানে প্রতি দুই লাখ মানুষের জন্য গড়ে একজন বা তার চেয়ে কম মানসিক চিকিতসক আছেন।
'হু'-এর হিসাব মোতাবেক, অনেক নিম্ন আয়ের দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একজন বা তার চেয়ে কম মানসিক বিশেষজ্ঞ রয়েছেন।
২০১০ সালে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বয়সী মানুষদের মধ্যে ১৬ শতাংশের বেশি মনোরোগে ভুগছেন। অন্যদিকে শিশুদের মধ্যে এ রোগের হার ১৮ শতাংশের বেশি। এ জরীপ চালানো হয়েছে ৫ থেকে অনুর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সীদের ওপর। এ জরীপে দেখা গেছে, প্রতিটি দেশের মানসিক সমস্যার ধরণ আলাদা।
চলতি বছরের মে মাসে 'হু'-এর সদস্য দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। তারা মানসিক রোগ সংক্রান্ত বিষয়ে বৃহত্তর সচেতনতা সৃষ্টি ও চিকিতসার মান বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment