Thursday, June 13, 2013

শুটিংয়ের অবসরে
শুটিংয়ের অবসরে
বিকেলবেলা। এফডিসির ৪ নম্বর ফ্লোরের সামন দিয়ে দ্রুত হেঁটে যাচ্ছেন নিরব। সঙ্গে অন্তরে অন্তরে রিমেক ছবির পরিচালক আতিক রহমান। নিরবের হাতে একগাদা কাগজপত্র। তাঁর চেহারায় মহা ব্যস্ততার ছাপ। চোখাচোখি হতেই থেমে গেলেন। কাছে এগিয়ে এসে বললেন, ‘দেশের বাইরে শুটিংয়ে যাব। কাগজপত্র ঠিকঠাক করতে ব্যস্ততা যাচ্ছে।’ 
কোন ছবির শুটিং? 
‘এতটুকুই বলি, চীনের একটা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে কাজটি হচ্ছে। পরিচালকও ওখানকার। একমাত্র আমিই বাংলাদেশ থেকে কাজ করছি। প্রথম শুটিং হবে মালয়েশিয়ায়।’ এর মধ্যে পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ এসে যোগ দিলেন। আমাদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তাঁর নতুন ছবি কানামাছির শুটিংয়ের কথাও জানালেন। বললেন, ‘আয়োজন মোটামুটি শেষ। গানগুলোর ধারণও শেষ হয়েছে। শিগগিরই ছবির কলাকুশলীদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করে ছবির কাজ শুরু করব।’ 
হঠাৎ দেখি, এফডিসির কড়ইতলার রাস্তা দিয়ে একদল মানুষ দৌড়ে আমাদের দিকে আসছেন। পেছনে তাকাচ্ছেন আর দৌড়াচ্ছেন। মনে মনে ভাবি, এ আবার কোন ঝামেলার মধ্যে এসে পড়লাম রে বাবা! এর মধ্যে কড়ইতলার ওদিক থেকে হ্যান্ড মাইকে ‘কাট, কাট...’ শব্দ ভেসে এল। ‘দৌড়বিদ’রা থেমে গেলেন। 
‘ও এবার বুঝছি, কড়ইতলায় শুটিং চলছে।’ বললেন নিরব। 

২.
নিরবের কথা ধরে ওখানকার আড্ডা ফেলে কড়ইতলার রাস্তায় রওনা হই। গিয়ে দেখি কড়ইতলার আঙিনাজুড়ে একাধিক ছোট ছোট ঘরের সেট ফেলা হয়েছে। মূল আঙিনার মাঝখানে অনেক মানুষের জটলা। জটলা ঠেলে ভেতরে গিয়ে দেখি, মনিটরে দৃশ্য দেখে নিচ্ছেন পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান। পাশে দাঁড়িয়ে নিজের ধারণ করা দৃশ্য দেখছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। দেখা শেষে ইলিয়াস কাঞ্চন বলে উঠলেন, ‘ওহ! দারুণ হয়েছে। চলেন আমরা পরের দৃশ্যে যাই।’ 
পাশে দাঁড়ানো প্রধান সহকারী পরিচালক অঘোর পালের সঙ্গে ছবিটি নিয়ে কথা হয়। বললেন, ‘ছবির নাম বাংলার ফাটাকেষ্ট। এই ফাটাকেষ্ট চরিত্রটি করছেন কাঞ্চন ভাই।’ ওদিকে পরের দৃশ্য ধারণের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন ইউনিটের কর্মীরা। ইলিয়াস কাঞ্চন নিজের চরিত্রটি নিয়ে বললেন, ‘এটি একটা ইতিবাচক চরিত্র। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এই নামে একটা ছবি নির্মিত হয়েছে। চরিত্রটি করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। জনপ্রিয়ও হয়েছে ছবিটি। ’ 
এর মধ্যে পরের দৃশ্য ধারণের প্রস্তুতি শেষ। পরিচালকের হাঁকডাক শুরু হয়েছে। 

৩.
চিত্রনায়ক জসিম ফ্লোরের চারপাশজুড়ে অনেক মানুষের আনাগোনা। ভেতরে কিছু একটা আয়োজন চলছে। ভাবতে ভাবতে স্টুডিওর ভেতরে উঁকি দিই। ভেতরে গিয়ে দেখি এলাহি কাণ্ড! বাংলাদেশ আইডল প্রতিযোগিতার বিরাট সেট ফেলা হয়েছে। সেটটির সাজসজ্জার কাজ চলছে। ঘুরে ঘুরে দেখতে দেখতে স্টুডিওর মধ্যেই পরিচয় হয় অনুষ্ঠানটির ইভেন্ট-প্রধান মাসুদের সঙ্গে। তিনি বললেন, আগামীকাল থেকে সারা দেশ থেকে বাছাই হয়ে আসা ১০০ জনকে নিয়ে এখানে থিয়েটার পর্বের প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ওয়ার্কশপ রাউন্ড, গানা রাউন্ড হয়ে গ্র্যান্ড ফিনালে। তিনি জানালেন, সারা দেশে নয়টি জোনে প্রায় এক লাখ ছেলেমেয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করে। সেখান থেকে ১০০ জনকে বাছাই করে ঢাকায় আনা হয়েছে। 
স্টুডিওর ভেতরে বাংলাদেশ আইডলের সেটটি যখন নানান রঙের আলোয় উদ্ভাসিত, বাইরে তখন সন্ধ্যা নেমেছে।

No comments:

Post a Comment