বিয়ের পর সন্তান নেয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন অনেকেই। মানবজন্মেরএ অমোঘ রহস্য নিয়ে যথাযথ ধারণাও যে নেই। তবে এটা জানবেন, আপনার প্রাত্যহিক জীবনের অভ্যাস প্রভাব ফেলে বাবা হওয়ার সম্ভাবনার ওপর। যে চালে চলছেন, হয়তো আপনার সেই অভ্যাস সমস্যা তৈরি করতে পারে প্রজনন ক্ষমতায়। বিভিন্ন দেশের চিকিত্সকরা তাই কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বাবা হতে ইচ্ছুকদের।
ধূমপান নয়: ধূমপানের কারণে পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ কমে না, কিন্তু ডিএনএ ব্যাপকভাবে ক্ষতির শিকার হয়। এমনকি এতে সন্তান জন্ম নিতে পারে অপূর্ণতা নিয়ে। কারণ নতুন শুক্রাণু গঠিত হতে তিন মাস সময় প্রয়োজন। তাই স্ত্রী গর্ভধারণের অন্তত তিন মাস আগ থেকে স্বামীর ধূমপান বন্ধ করা উচিত।
কিছু রোদ মাখুন গায়ে: রোদের মধ্যে থাকলে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়ে। এটা ভালো শুক্রাণু তৈরিতে সহায়তা করে। এছাড়া রোদের ফলে পুরুষের জন্মদান সক্ষমতা কমানোর জন্য দায়ী অন্যতম উপাদান মেলাটোনিন উত্পাদন কমে।
অতিরিক্ত নয়: বাবা হওয়ার জন্য অতিরিক্ত বাসনা মনে পোষা ঠিক নয়। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিতে হবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ আচরণে সমস্যা তৈরি করে; যা খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে আচরণে প্রভাব ফেলে।
ওজনের প্রতি লক্ষ রাখুন: বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) ২০-এর কম হলে পুরুষের জন্মদানক্ষমতা কমে যেতে পারে। আবার বিএমআই ২৫-এর ওপর হলে শুক্রাণুর পরিমাণ ২২ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই প্রজনন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা জরুরি। সাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে এটা ঠিক রাখা সম্ভব। অধিক পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ পুরুষের প্রজনন সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চিজের মতো ভিটামিন ‘এ’সমৃদ্ধ খাবার, লেবুর মতো ভিটামিন ‘সি’যুক্ত খাবার, সরিষার মতো ভিটামিন ‘ই’সমৃদ্ধ খাবার বেশি জরুরি। এছাড়া জিংক ও ফলিক এসিডসমৃদ্ধ খাবারও উপকারী। এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত শুক্রাণুকে সারিয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
শরীরচর্চা: শরীরচর্চা চাপ কমাতে সাহায্যে করে। এটা পুরুষ ও নারী উভয়ের সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়ক।
অ্যালকোহল পরিহার: অ্যালকোহল ও প্রজনন সক্ষমতা শব্দ দুটি বিপরীতমুখী। অতিরিক্ত মদপান পুরুষের জন্মদানক্ষমতা দুর্বল করে। শুক্রাণুর ক্ষমতা বাড়াতে তাই দ্রুত বর্জন করুন এ ধরনের তরল পানীয়। সম্ভব না হলে অন্তত কমিয়ে দিন।
হারবাল: সবুজ চায়ের মতো পানীয় প্রজনন সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়ক হবে। তাই নিয়মিত পান করতে পারেন সবুজ চা।
মাদক থেকে দূরে: মাদক-জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ পুরুষের সক্ষমতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যেমন— মারিজুয়ানা সেবনের ফলে একজন পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ ও প্রজননক্ষমতা কমে যেতে পারে। এতে অস্বাভাবিক ধরনের শুক্রাণুর উত্পাদনও বেড়ে যায়।
গরম ক্ষতিকর: অধিক সময় ধরে অণ্ডকোষ আবদ্ধ এবং গরম অবস্থায় থাকলে ভীষণ ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। এতে কমে যেতে পারে শুক্রাণুর উত্পাদন। তাই খুব বেশি আঁটসাঁট আন্ডারওয়্যার কিংবা প্যান্ট না পরা ভালো। এছাড়া গরম পানি দিয়েও গোসল করা ক্ষতিকর। একই কারণে ল্যাপটপ কোলে নিয়েও দীর্ঘ সময় কাজ করা যাবে না।
থামুন: সাধারণত ভীষণ চাপের মধ্যে থাকলে তা প্রজনন ক্ষমতা ও ইচ্ছাশক্তি কমায়। তাই নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। আর মাথায় বাড়তি চাপ না নিয়ে উচ্ছল থাকার চেষ্টা করুন
No comments:
Post a Comment