স্বাস্থ্যকর হিসেবে যে সব খাবারকে বিবেচনা করা হয় তার অন্যতম দই- এ কথা আমরা সবাই কম বেশি জানি। এর কারণগুলো হলো- খেতে মজা, হজম করতে সহজ, দেহ রক্ষার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং পুষ্টির চমতকার উৎস এই দই।
দইয়ে কী কী খাদ্য গুণ আছে আসুন তা এবারে না হয় চট করে দেখে নেই।
ক্যালসিয়ামের ভাণ্ডার: অনেকেই দুধ খেতে পছন্দ করেন না। আর কেউ কেউ দুধ খেয়ে হজম করতে পারেন না। ল্যাকটোস নামে এক জাতীয় ব্যাকটেরিয়ার ঘাটতি থাকলে দেহ দুধ হজম করতে পারে না।
এমন পরিস্থিতিতে দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের যোগান দৈনিক কী করে পাওয়া যাবে এ কথা ভেবে ভেবে হন্যে হয়ে ওঠেন অনেকে। মানব দেহের হাড় ও দাঁত শক্ত রাখা এবং উন্নয়নে ক্যালসিয়ামের ভূমিকার কথা আমরা প্রায় সবাই জানি। এমন অবস্থায় নিয়মিত দই খাওয়ার মধ্যদিয়ে দেহকে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের যোগান দিতে পারি আমরা।
পুষ্টির অনবদ্য উতস: দইয়ে প্রচুর পরিমাণে আমিষ আছে। দেহের কোষকলার গঠন ও মেরামতে আমিষের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। দৈনিক দই খেলে দেহ প্রয়োজনীয় আমিষের এ যোগান পেতে পারে।
এ ছাড়া দইয়ে পটাসিয়াম নামে একটি খনিজ উপাদানও আছে। নিয়মিত দই খেলে রক্তে পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং রক্তচাপ হ্রাসে তা সহায়তা করে। দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি২ এবং বি১২ রয়েছে। দেহের প্রতিদিনের ভাঙাগড়া যাকে চিকিত্সা বিদ্যার পরিভাষায় বিপাকক্রিয়া বলা হয় তাতে সহায়তা করে এই দুই ভিটামিন। এ ছাড়া, নখ, চুল ও ত্বকের জন্যও উপকারী এই দুই ভিটামিন।
কোলেস্টেরল কমায়: নিয়মিত দই খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পেতে পারে। দেহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করে। আমাদের দেহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সৈনিক শ্বেত কোষরাজিকে উজ্জীবিত করে তোলে দই এবং সংক্রমণ বিরোধী যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই সব শ্বেত কোষ। এ ছাড়া, অ্যালার্জির উপসর্গ এবং শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের সংক্রমণ হ্রাস করতে সাহায্য করে দই।
পেটের অসুখ দূর করতে সাহায্য করে: দই কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, কোলন ক্যান্সার ও প্রদাহসহ পেটের নানা ধরণের অসুখ দূর ও প্রতিহত করতে সহায়তা করে।
ত্বকের জন্য উপকারী: দই ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয়। ত্বকের দাগ দূর করতে চমত্কারভাবে সহায়তা করে দই। অনেকে শুধু দই খেয়েই ক্ষান্ত হন না সেইসঙ্গে মুখসহ দেহের অনেক জায়গায়ই দইয়ের প্রলেপ নিয়মিত দেন।
কাজেই, নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সবাই দই রাখবেন। বিশেষ করে ভেজালের এ যুগে দোকানে কেনা দইয়ের বদলে ঘরে পাতা দই সবাই নিয়মিত ব্যবহার করবেন এবং দেহ ও মনে উতফুল্ল হয়ে উঠবেন এমন আশা থাকল।
No comments:
Post a Comment