Sunday, June 23, 2013

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
আরটিএনএন
ঢাকা: স্বর্ণের দাম কমেছে। নতুন দামে গ্রাম প্রতি কমেছে ক্যারেট ব্যবধানে ১০৫ টাকা থেকে ৮৫ টাকা, যা ভরিপ্রতি ২ হাজার টাকারও বেশি। তবে রূপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

হঠাৎ করে স্বর্ণের এই দাম পড়তিতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, বায়তুল মোকাররম, ফার্মভিউ স্বর্ণের মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি স্বর্ণের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের নতুন মূল্য তালিকা অনুয়ায়ী সবচেয়ে ভালো স্বর্ণ অর্থ্যাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১০৫ টাকা কমে ৪ হাজার ২৭৫ টাকা, ৯৫ টাকা কমে ২১ ক্যারেট স্বর্ণ ৪ হাজার ৮৫ টাকা এবং ৮৫ টাকা কমে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, সনাতনী স্বর্ণের দাম গ্রাম পতি ৮০ টাকা কমে ২ হাজার ৪৫০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়িরা।

এ নিয়ে গত দুই মাসে দুবার বৃদ্ধির বিপরীতে তিনবার কমেছে স্বর্ণের দর। বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) মতে, ভরিপ্রতি সর্বশেষ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ ক্যারেটে ৫১ হাজার ৮৮ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৪৮ হাজার ৭৫৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ৪১ হাজার ৮১৫ টাকা এবং সনাতনী স্বর্ণ ২৯ হাজার ৫১০ টাকা।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন আরটিএনএন- কে বলেন, স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, ডলারের সঙ্গে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ডলারের দাম পড়তির দিকে। এ কারণে স্বর্ণের দামও কমছে। বাজুস’র কার্যনিবাহী কমিটি সভায় এই দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়।

আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় জরুরি সভায় বৃহস্পতিবার আবার দাম কমানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তা শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে বলেও জানান দেওয়ান আমিনুল।

তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ঘন ঘন স্বর্ণের দাম কমছে। শিগগিরই আরেক দফা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, স্বর্ণের দাম কমায় ব্যবসায়িকভাবে বিপাকে পড়েছেন দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ করে ধারাবাহিকভাবে দাম কমতে থাকায় তাদের আগের চালানের স্বর্ণে বিপুল পরিমাণ লোকসান গুণতে হচ্ছে।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে অবস্থিত আপন জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপক রাজিব আহমেদ বলেন, ‘স্বর্ণের দাম কমলেও বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে না। আর এটি ভোজ্যপণ্য বা সাধারণ ব্যবহার্য পণ্য নয় যে, দাম কমলেই মানুষ কিনবে। তাই, বারবার স্বর্ণের দাম পড়ে যাওয়ার ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’

তবে, বিক্রির পরিমাণ বাড়লে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে জানান তিনি।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে আমিন জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপক রাহাত উল্লাহ বলেন, ‘স্বর্ণের দাম কমলে প্রথম দিকে বিক্রির পরিমাণ কিছুটা বাড়ে, যা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট সহায়ক নয়। তবে এবার তা হচ্ছে না।’

এই ব্যবসায় সরকারের ভর্তুকি দেয়া উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে মেয়ের বিয়ের জন্য স্বর্ণ কিনতে আসা গোপীবাগের এক মা শারমিন আক্তার জানান, ‘স্বর্ণের দাম এতোবেশি ছিল যে, বিয়ের জন্য হাফিয়ে উঠতে হতো। দাম কমাতে ভালো লাগছে। যা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল এখন আরেকটু বাড়িয়ে গহনা দেয়া যাবে।’

এদিকে, বারবার দরপতনে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ফার্মগেটের ফার্মভিউ মার্কেটের হৃদয় জুয়েলার্সের মালিক সবুর খান। তিনি বলেন, ‘এইভাবে দাম কমতে থাকেল ব্যবসা রেখে পালাতে হবে। আমাদের মূল ক্রেতা মধ্যআয়ের মানুষ। তারা স্বর্ণ কিনে খুবই কম। যা দিয়ে খুব বেশি লাভের মুখ দেখা যায় না। এর মধ্যে দাম কমলে লাভ না করে সব সময় ক্ষতিই গুণতে হবে।’

No comments:

Post a Comment