শুরুটা ছিল ধূমকেতুর মতো। ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সী এক বিস্ময় বালকের প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি। রূপকথার এক অভিষেক! টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসকেই যেন কাঁপিয়ে দিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ২০০১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর যেন ক্রিকেটের নব দিগন্তে ঢুকে পড়ল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আশরাফুলের সেই ম্যাজিক্যাল সেঞ্চুরি টাইগারদের পৌঁছে দিল অনন্য উচ্চতায়। হাজারো সমালোচনার মাঝে ২০০০ সালে 'টেস্ট মর্যাদা' পাওয়ার পর অ্যাশের অভিষেক সেঞ্চুরি যেন বাংলাদেশের হয়ে ক্রিকেট বিশ্বের কাছ থেকে সমীহ আদায় করে নিল। শুধু টেস্টেই নয়, ওয়ানডে ও টি-২০তেও আশরাফুলের একাধিক মহাকাব্যিক ইনিংস বাংলাদেশের বড় জয়গুলোর রাজসাক্ষী হয়ে আছে।
'আশরাফুলের ব্যাট হাসলে হাসে বাংলাদেশ'-বাক্যটা যে প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। ১২ বছরের ক্যারিয়ারে আশরাফুল যে খুব ধারাবাহিক ছিলেন তা নয়। কিন্তু নিজের দিনে কাউকে পরোয়া করতেন না। বিশ্বের বাঘা বাঘা বোলারদের ব্যাটিং জাদু দিয়ে নাকানিচুবানি খাইয়েছেন অনেকবার। ব্যাটিং স্টাইলের কারণে অনেকে তাকে বাংলাদেশের 'টেন্ডুলকার' বলেও মজা করে ডাকতেন। আর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় মোহাম্মদ আশরাফুলের পরিচয় 'ছোট' দেশের 'বড়' তারকা। মজার ব্যাপার হলো, সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, নাসিরদের মতো তারকা ক্রিকেটারের আবির্ভাবে ক্রিকেট বিশ্বের সেই 'ছোট' দেশটা যখন ধীরে ধীরে বড় দেশে পরিণত হচ্ছিল, ঠিক তখনই কক্ষপথ হারালেন 'বড়' তারকা। 'ফিক্সিং ' নামক বিষ অমৃত সুধা মনে করে টুপ করে গিলে ফেললেন আশরাফুল। জীবনে যে মানুষ করলার (সবজি) তিক্ততাও সইতে পারেননি, তিনি বিষ পান করে স্বাভাবিক থাকতে পারেন! বেদনায় নীল হয়ে ছটফট করতে থাকা আশরাফুল ক্রিকেটের স্বার্থেই সব খুলে বললেন। কারা তাকে ফিক্সিং করতে নির্দেশ দিয়েছেন তাদের নামও বলেছেন। কিন্তু সত্য যে বড়ই নির্মম। তাই নির্দেশদাতাদের আপাতত কিছু না হলেও সাময়িকভাবে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন আশরাফুল। হয়তো আরও বড় কোনো সাজাও অপেক্ষা করছে তার সামনে।
জাতীয় দলের জার্সিতে আশরাফুলের ৬১ টেস্টে গড় ২৪ ও ১৭৭ ওয়ানডেতে ২২.২৩ এবং ২৩ টি-২০ ম্যাচে গড় ১৯.৫৬। এক যুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের এ পরিসংখ্যান বর্ণাঢ্য নয়। কিন্তু অ্যাশের ক্যারিশমা তো অন্য জায়গায়। তিনি ছিলেন আমাদের ক্রিকেটে 'অন্ধের যষ্টি'! তার অধিকাংশ বড় ইনিংসই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ২০০৫ সালের ১৮ জুন কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ম্যাচে তার ১০১ বলে ১০০ রানের ইনিংস বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এখনো জ্বল জ্বল করছে। একই সিরিজে পরের ম্যাচে নটিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫২ বলে ৯৪ রানের ইনিংসটি তো অবিশ্বাস্য। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে গায়ানায় আশরাফুলের ৮৩ বলে ৮৭ রানের ইনিংসে ভর করেই তো টাইগাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয়। একই বছরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭) অ্যাশের ২৭ বলে ৬১ রানের সাইক্লোন ইনিংসে ভর করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। ওই জয়ই টাইগারদের সুপার এইটে নিয়ে যায়। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি জয়ে প্রধান ভূমিকা ছিল আশরাফুলের।
২০০৭ সালটা ছিল অ্যাশের জন্য খুবই পয়মন্ত। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত তিনি। ২ জুন অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে যান আশরাফুল। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত টাইগারদের দলপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে ভারত ও আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলে নেতৃত্ব হারান আশরাফুল।
২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত দলে জায়গাই পাননি অ্যাশ। কিন্তু চলতি বছর শ্রীলঙ্কা সফরে জায়গা পেয়েই ১১ মার্চ স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ১৯০ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস খেলেন। নতুন করে আশরাফুল যখন নিজেকে ফিরে পেলেন, তখনই ফিক্সিং বিষে জর্জরিত হয়ে গেলেন। আশরাফুল মিডিয়ার কাছে নিজের দোষ স্বীকার করার পর কত ভক্ত যে নীরবে চোখের জল ফেলেছেন! কতজন যে ডুকরে ডুকরে কেঁদেছেন। কতজন যে যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন! কয়েক দিন আগে ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল বলেছিলেন, 'আশরাফুল হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম প্রেম!' আর প্রথম প্রেম কি কখনো ভোলা যায়!
'আশরাফুলের ব্যাট হাসলে হাসে বাংলাদেশ'-বাক্যটা যে প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। ১২ বছরের ক্যারিয়ারে আশরাফুল যে খুব ধারাবাহিক ছিলেন তা নয়। কিন্তু নিজের দিনে কাউকে পরোয়া করতেন না। বিশ্বের বাঘা বাঘা বোলারদের ব্যাটিং জাদু দিয়ে নাকানিচুবানি খাইয়েছেন অনেকবার। ব্যাটিং স্টাইলের কারণে অনেকে তাকে বাংলাদেশের 'টেন্ডুলকার' বলেও মজা করে ডাকতেন। আর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় মোহাম্মদ আশরাফুলের পরিচয় 'ছোট' দেশের 'বড়' তারকা। মজার ব্যাপার হলো, সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, নাসিরদের মতো তারকা ক্রিকেটারের আবির্ভাবে ক্রিকেট বিশ্বের সেই 'ছোট' দেশটা যখন ধীরে ধীরে বড় দেশে পরিণত হচ্ছিল, ঠিক তখনই কক্ষপথ হারালেন 'বড়' তারকা। 'ফিক্সিং ' নামক বিষ অমৃত সুধা মনে করে টুপ করে গিলে ফেললেন আশরাফুল। জীবনে যে মানুষ করলার (সবজি) তিক্ততাও সইতে পারেননি, তিনি বিষ পান করে স্বাভাবিক থাকতে পারেন! বেদনায় নীল হয়ে ছটফট করতে থাকা আশরাফুল ক্রিকেটের স্বার্থেই সব খুলে বললেন। কারা তাকে ফিক্সিং করতে নির্দেশ দিয়েছেন তাদের নামও বলেছেন। কিন্তু সত্য যে বড়ই নির্মম। তাই নির্দেশদাতাদের আপাতত কিছু না হলেও সাময়িকভাবে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন আশরাফুল। হয়তো আরও বড় কোনো সাজাও অপেক্ষা করছে তার সামনে।
জাতীয় দলের জার্সিতে আশরাফুলের ৬১ টেস্টে গড় ২৪ ও ১৭৭ ওয়ানডেতে ২২.২৩ এবং ২৩ টি-২০ ম্যাচে গড় ১৯.৫৬। এক যুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের এ পরিসংখ্যান বর্ণাঢ্য নয়। কিন্তু অ্যাশের ক্যারিশমা তো অন্য জায়গায়। তিনি ছিলেন আমাদের ক্রিকেটে 'অন্ধের যষ্টি'! তার অধিকাংশ বড় ইনিংসই ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ২০০৫ সালের ১৮ জুন কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ম্যাচে তার ১০১ বলে ১০০ রানের ইনিংস বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এখনো জ্বল জ্বল করছে। একই সিরিজে পরের ম্যাচে নটিংহামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫২ বলে ৯৪ রানের ইনিংসটি তো অবিশ্বাস্য। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে গায়ানায় আশরাফুলের ৮৩ বলে ৮৭ রানের ইনিংসে ভর করেই তো টাইগাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয়। একই বছরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭) অ্যাশের ২৭ বলে ৬১ রানের সাইক্লোন ইনিংসে ভর করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ। ওই জয়ই টাইগারদের সুপার এইটে নিয়ে যায়। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি জয়ে প্রধান ভূমিকা ছিল আশরাফুলের।
২০০৭ সালটা ছিল অ্যাশের জন্য খুবই পয়মন্ত। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত তিনি। ২ জুন অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়ে যান আশরাফুল। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত টাইগারদের দলপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে ভারত ও আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলে নেতৃত্ব হারান আশরাফুল।
২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত দলে জায়গাই পাননি অ্যাশ। কিন্তু চলতি বছর শ্রীলঙ্কা সফরে জায়গা পেয়েই ১১ মার্চ স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ১৯০ রানের অবিস্মরণীয় এক ইনিংস খেলেন। নতুন করে আশরাফুল যখন নিজেকে ফিরে পেলেন, তখনই ফিক্সিং বিষে জর্জরিত হয়ে গেলেন। আশরাফুল মিডিয়ার কাছে নিজের দোষ স্বীকার করার পর কত ভক্ত যে নীরবে চোখের জল ফেলেছেন! কতজন যে ডুকরে ডুকরে কেঁদেছেন। কতজন যে যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন! কয়েক দিন আগে ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল বলেছিলেন, 'আশরাফুল হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম প্রেম!' আর প্রথম প্রেম কি কখনো ভোলা যায়!
No comments:
Post a Comment