মহিলাদের হার্ট এ্যাটাক
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেস বারডেম, ঢাকা।
১. বুকে ব্যথা বা অস্বস্থি
বুকে ব্যথা হলো সচরাচর উপসর্গ। তবে অনেক নারীর তেমন ব্যথা হতে পারে পুরুষদের তুলনায় অনেক কম এবং অন্যরকম। মনে হবে বুক চিপে আসছে, নয়তো বুক ভার ভার লাগছে এবং ব্যথা হতে পারে বুকের যে কোনও স্থানে। কেবল বাম দিকে হবে, তাই নয়। সানফ্রান্সিসিসকো, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমেনর্স কার্ডিওভাস্কুলার সার্ভিসেস ডিরেক্টর ডা: রিতা রিডবার্গ বলেন, মনে হবে বুকে সত্যি বেজায় অস্বস্থি হচ্ছে, মনে হবে ধাতব বা কাঠের পাত কষে ধরে শক্ত করা হয়েছে।
২. ব্যথা হতে পারে বাহু,
পিঠ বা চোয়ালে
এমন ব্যথা নারীদের ক্ষেত্রে হয় বেশি। মনে করবেন অনেকের যে ব্যথা হওয়া উচিত বুকে বা বাম বাহুতে, কিন্তু ব্যথা হলো পিঠ বা চোয়ালে। ব্যথা হতে পারে ক্রমে ক্রমে আবার হঠাত্ও ব্যথা হতে পারে। কম বেশি হতে হতে তীব্র হয়ে উঠতে পারে। ঘুমিয়ে থাকলে ব্যথায় জাগিয়ে তুলতে পারে। লসএঞ্জেলস-এর সিডাব্স সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারের বারবারা স্ট্রাইসান্ড ওমেনস্ হার্ট সেন্টারের ডিরেক্টর কার্ডিওলজিস্ট সি নোয়েল বেরি মার্জ বলেন, কোমরের উপর অংশে যে কোনও স্থানে কোনও ব্যথা বা উপসর্গ যার ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না, তা জানাতে হবে ডাক্তারকে।
৩. পেটের ব্যথা
ককনও কখনও অনেকে পাকস্থূলীর ব্যথাকে ভুল করে ভাবেন হয়তো এটা হার্ট এ্যাটাকের ব্যথা নয়ত। বুক জ্বালা বা ফ্লু'র কারণে এমন ব্যথা হতে পারে। কখনও অনেক নারীর অভিজ্ঞতা এমন হয় যে, পেটে প্রচন্ড চাপ যেন পেটের উপর হাতীর চাপ' বলেন নিউ ইউর্কের জোয়ান এইচ. টিস সেন্টারের মেডিকেল সেন্টারের কার্ডিওলজিস্ট নাইকো গোল্ডবার্গ।
৪. শ্বাসকষ্ট, বমিভাব,
মাথা হালকা বোধ হওয়া
অকারণে যদি শ্বাসক্রিয়াতে খুব কষ্ট হয়, হতে পারে তা হার্টে এ্যাটাকের জন্য। সঙ্গে যদি অন্য দু'একটি উপসর্গ থাকে, তাহলে সন্দেহ অবশ্য। মনে হবে ম্যারাথন দৌঁড়ে এসেছেন, অথচ বস্তুত: পক্ষে একটুও শরীর নাড়ানো হয়নি।
৫. শরীরের ঘাম ঝরা
শরীর শীতল করে অনেকের ঘাম ঝরলে তা নারীর জন্য হার্ট এ্যাটাকের সংকেত হতে পারে। ব্যায়াম করে যে ঘাম হয় বা বাইরে রোদে কাজ করে যে ঘাম, তেমন নয়, মনে হবে শরীর মনে খুব চাপ পড়েছে, ঘাম ঝরছে। ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া খুবই প্রয়োজন।
৬. ক্লান্তি বোধ হওয়া
যাদের হার্ট এ্যাটাক এমন যে
কিছু নারী প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব
করেন, ধীরস্থিরভাবে বসে আছেন, নড়ছেন না, তবুও খুব ক্লান্ত বোধ করছেন। রোগী বলেন বুক জুড়ে ক্লান্তি বোধ করছেন। সহজ সব কাজ কর্ম করতে পারেন না, এমনকি গোসল করতে যেতেও যে অসীম ক্লান্তিবোধ করেন। এমন হলেও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরী। এমন সব উপসর্গের অভিজ্ঞতা হলে ডাক্তারী সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না,
দেরি না করে জরুরীভাবে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
এমন উপসর্গ দেখা দিলে সাহায্য চাইতে অবশ্যই দেরি করবেন না।
এ সম্পর্কে ডা: রিটা এফ রেডবার্গের বক্তব্য, 'এমন উপসর্গ হলে
পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইমাজেন্সিতে যেতে অনেক বেশি
দেরি করেন। কারণ তারা মনে
করেন যে, উপসর্গগুলো তুচ্ছ, যা এমনিতেই চলে যাবে, তবু এমন
ঝুঁকি নেওয়া মোটেও উচিত নয়।' নিজে নিজে গাড়ী ড্রাইভ করে হাসপাতালে যাবেন না।
প্রয়োজনে এ্যাম্বুলেন্স ডাকুন।
নিজে নিজে ড্রাইভ করে যাওয়া
বেজায় বিপজ্জনক। বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনও যেন ড্রাইভ করে না নিয়ে
যান কারণ এতে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
সুতরাং যা অনুভব করছেন তা
কোন ভাবেই এড়িয়ে যাবেন না।
ভুল হলেও, লোকে বোকা বললেও লজ্জা পাবেন না। চেকআপ
প্রয়োজন জরুরী ভুল হোক আর
শুদ্ধ হোক। স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া
জরুরী, জীবন বাচাঁনোর জন্য।
No comments:
Post a Comment